Business

Games

» » » » সত্যিই শাসক এবার শঙ্কিত, সন্ত্রস্ত। জারি হল কার্লাইল অ্যাক্ট ।

১৯০৫ সালের ১৬ই অক্টোবর সাম্প্রদায়িক বিভাজনের মতলবে বঙ্গ বিভাজনের সিদ্ধান্ত কার্যকর করে ব্রিটিশ সরকার। তার আগে থেকেই রবীন্দ্রনাথ, আনন্দমোহন বসু, মনীন্দ্রচন্দ্র নন্দী, রামেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদী সহ স্বনামধন্য মানুষেরা বঙ্গ বিভাজনের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলেন। সেই আন্দোলনে ব্যাপক সংখ্যায় অংশগ্রহণ করে স্কুল-কলেজের পড়ুয়ারা। তরুণদের আবেগপূর্ণ অংশগ্রহণে প্রমাদ গোনে শাসক শ্রেণী। বঙ্গভঙ্গ কার্যকর করার দিন ছয়েক আগে, ১০ অক্টোবর, মুখ্যসচিব আর ডাব্লিউ কার্লাইল জেলা শাসকদের উদ্দেশ্যে একটি গোপন সার্কুলার পাঠান। তাতে বলা হয় স্বদেশী আন্দোলনে ছাত্রদের অংশগ্রহণ যেকোন মূল্যে প্রতিহত করতে হবে। সেই সার্কুলারকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে ছাত্রসমাজ দ্বিগুণ উৎসাহে পথে নামে। যথারীতি সাম্রাজ্যবাদী শাসকের দাঁত-নখ তীক্ষ্ণ হয়। পুলিশি দমন-পীড়নের পাশাপাশি ছাত্রনেতাদের স্কুল-কলেজ থেকে বহিষ্কার করা হয়। রিপন কলেজের স্নাতক স্তরের ছাত্র শচীন্দ্রপ্রসাদ বসু গড়ে তোলেন অ্যান্টি সার্কুলার সোসাইটি। বহিষ্কৃত ছাত্রদের শিক্ষালাভের বিকল্প সুযোগ করে দেয় ওই সোসাইটি। তারই ধারাবাহিকতায় ১৯০৬ সালের ১৪ই আগস্ট গঠিত হয় জাতীয় শিক্ষা পরিষদ। উদ্যোক্তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, সতীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়, বিপিনচন্দ্র পাল প্রমুখ।

এতদিন পরে ফের সেই কার্লাইল সার্কুলারের প্রত্যাবর্তন ঘটল তথাকথিত মা-মাটি-মানুষের সরকারের হাত ধরে। আর জি কর হাসপাতালের নারকীয় ঘটনায় যুক্ত অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়ে দল-মত নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষ আজ পথে নেমেছেন। অভূতপূর্ব জনজাগরণ ঘটেছে সারা রাজ্য তথা দেশে, এমনকি প্রতিবাদ ধ্বনিত হচ্ছে বিদেশেও। গ্রাম-শহর নির্বিশেষে স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরাও প্রতিদিন ব্যাপক সংখ্যায় পথে নেমে দৃপ্ত কন্ঠে প্রতিবাদ ধ্বনিত করছে। এই অবস্থায় গতকাল, ২৩ আগস্ট, রাজ্যের মুখ্যসচিব একটি সার্কুলার পাঠিয়েছেন জেলা শাসকদের কাছে। তার মূল কথাটি হল, প্রতিবাদী আন্দোলনে স্কুল পড়ুয়াদের অংশগ্রহণ বরদাস্ত করা হবে না!(আনন্দবাজার,২৪ আগস্ট ২০২৪)

এখন প্রশ্ন হল, গদি হারানোর ভয়ে সন্ত্রস্ত শাসকের এই সার্কুলার ছাত্রসমাজ বরদাস্ত করবে তো? ছাত্রদের দিকে তাকিয়েই তো বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম একদিন বলেছিলেন, "আমরা শক্তি আমরা বল/ আমরা ছাত্রদল!" নেতাজি বলেছিলেন, "মনুষত্ব লাভের একমাত্র উপায় মনুষ্যত্ব বিকাশের সকল অন্তরায় চূর্ণ-বিচূর্ণ করা। যেখানে যখন অত্যাচার ও অনাচার দেখিবে সেখানে নির্ভীক হৃদয়ে শির উন্নত করিয়া প্রতিবাদ করিবে এবং নিবারণের জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করিবে।"(নূতনের সন্ধানে) সর্বোপরি মাথার উপরে রয়েছেন চিরভাস্বর রবি। সবুজের অভিযান কবিতায় তিনি বলেছেন --
"তোরে হেথায় করবে সবাই মানা।
হঠাৎ আলো দেখবে যখন
ভাববে একি বিষম কান্ডখানা।
সংঘাতে তোর উঠবে ওরা রেগে,
শয়ন ছেড়ে আসবে ছুটে বেগে,
সেই সুযোগে ঘুমের থেকে জেগে
লাগবে লড়াই মিথ্যা এবং সাঁচায়।
আই প্রচন্ড, আয় রে আমার কাঁচা।"
✍️
চন্দ্রপ্রকাশ সরকার
২৪ আগস্ট ২০২৪

«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post

No comments:

Leave a Reply

Note: only a member of this blog may post a comment.