Business

Games

» » » » ড্যাম দিয়ে দিল্লীর পানি আটকাবেন! বাংলাদেশের ভূগোল আপনি বুঝেনতো?

     ড্যাম দিয়ে দিল্লীর পানি আটকানো কোন প্র্যাকটিকাল সলিউশন নয়। কারণ বাংলাদেশ সমতল ভূমি, ড্যামের জন্য যে পাহাড়ি এলাকা লাগে ন্যাচারাল ব্যরিয়ারের জন্য তা নেই, পিলারের জন্য যে পাথর লাগে তা মাটির ২০০ ফুট নীচে ইত্যাদি ইত্যাদি নানাবিধ প্র্যাক্টিক্যাল প্রবলেম আছে।

পানি উপর থেকে নীচে প্রবাহিত হয়। নদীগুলো যখন ভারত হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে তখন ভারতে পড়েছে নদীর আপার স্ট্রিম, আর আমরা পেয়েছি লোয়ার স্ট্রিম। লোয়ার স্ট্রিমে ড্যাম দিয়ে আপার স্ট্রিমের ড্যাম খুলে ছেড়ে দেয়া পানিকে আটকানো কোনো প্র্যাক্টিক্যাল সলিউশান না।
কেউ কেউ আবার বলছে বাংলাদেশ ৭,৫০০ ফুট উঁচু ড্যাম দিবে। তারা কী জানে এই মুহূর্তে বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু ড্যামের উচ্চতা কেবল ১,০০১ ফুট। যা চীনের জিনপিং-১ ড্যাম। আমেরিকার সবচেয়ে ব্যয়বহুল আর উচু ড্যামের উচ্চতা ৭৭০ ফিট।
বন্যা নিয়ন্ত্রণের সবচেয়ে কার্যকর আর সম্ভাব্য উপায় হলো ভারতের সাথে বসে একটা সলিউশনে আসা। কিন্তু ভারত তো ভারত। তারা খালি নিতে জানে, দিতে না। তারা বিভিন্ন নদীগুলোর পানি ডাইভার্ট করে আমাদের নদীগুলোকে হয় শুকিয়ে মারছে, আর না হয় নিজেদের প্রয়োজনে বিনা ওয়ার্নিং এ ড্যামের গেইট খুলে দিয়ে ডুবিয়ে মারছে। যা চরম অসভ্যতা। পানি শেয়ারে যে আন্তর্জাতিক নিয়মাবলী আছে, তা তারা মনে না। কোন একটা প্রতিবেশির সাথে তাদের ভালো সম্পর্ক নেই। যারা ভাবছেন ভালো প্রতিবেশী হওয়ার প্রয়োজনীয়তা একদিন না একদিন বুঝতে পারবে, আমার মতে পারবে না। ভালো প্রতিবেশী হওয়া তাদের ইচ্ছাতেও নেই, আদতেও নেই।
ভারত কখনোই বাংলাদেশকে তাদের ন্যায্য পানি দেয় না। এর জন্য কোর্ট কাচারি করে চাপ সৃষ্টি করা গেলেও তারা এতেই নমনীয় হয়ে সুড়সুড় করে আমাদের ন্যায্য পানি আমাদের দিবে বলে বলে মনে করি না। বাস্তবে তারা কোন কোর্টের রায় মানবে না। এবার সেটা জাতিসংঘ হোক কী আইসিজে বা অন্য কোনো।
এই ব্যাপারে ভারতকে অন্য ভাবে চাপে ফেলতে হবে। একদিকে চীন, নেপাল, ভুটান যারা ভারতের আপার স্ট্রিমে আছে তাদের সাথে নিয়ে নদী চুক্তিতে যেতে হবে। অপরদিকে ভারত স্থল আর নৌ পথে আমাদের যেসব ট্রানসিট ব্যবহার করে সেগুলো বন্ধ করে ভারতকে পানির সুষম বণ্টনে নেগোশিয়েট করতে বাধ্য করতে হবে।
অপর দিকে, আমাদের নদীগুলো কিভাবে এই বাড়তি পানির চাপ নিয়ে পানি সরিয়ে সাগরে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ফেলতে পারবে তার বিকল্প আমাদেরকেই খুঁজে বের করতে হবে। জলবায়ুর কারণে সারা বিশ্বে বৃষ্টি, জলোচ্ছাস, খরা, বন্যা , সমুদ্রের লেভেল ইত্যাদি বেড়ে গেছে। এসব প্রতিরোধে প্রচুর গবেষণা হচ্ছে, সেমিনার হচ্ছে, সেসব এটেন্ড করে বিভিন্ন উপায়ে শিখে এসে দেশে তা প্রয়োগ করতে হবে। দেশে বিদেশে আমাদের নিজেদের প্রচুর এক্সপার্ট আছে, তাদের নিয়ে একটা এক্সপার্ট গ্রুপ বানিয়ে খুব দ্রুততার সাথে সলিউশনের দিকে আগাতে হবে।
ছবি চীনের থ্রী গর্জেস ড্যাম

ভারতকে পানি বণ্টন আর নিয়ন্ত্রণের জন্য রেগুলার মিটিং করার জন্য চাপ প্রয়োগ করতে হবে। ভারতের সাথে যে কোনো দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় বাংলাদেশ থেকে কেবল এডমিনিস্ট্রেশনের লোক নয় , টেকনিক্যাল এক্সপার্টদেরও পাঠাতে হবে, যাতে তারা ভারতীয় এক্সপার্টদের ভূজুং ভাজং করণগুলোকে নিজেদের লজিক আর কারণ সহ মোকাবেলা করতে পারে। আমাদের ভাষাগত দুর্বলতার কারণে বেশিরভাগ সময়ে দ্বিপাক্ষিক আলোচনাগুলোতে ভারতীয় টিম ডমিনেট করে, এদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। বাংলাদেশি টিম মেম্বারদের ইংরেজি ভাষায় অত্যন্ত দক্ষ আর বোল্ড হতে হবে যাতে তারা মিটিংগুলোতে চুপ না থাকে। মোট কথা ভারতের স্ট্রং ম্যান ট্যাক্টিককে আমাদের স্ট্রং ম্যানেরা গিয়ে শক্ত ভাবে মোকাবেলা করবে।
আর আমাদের দেশে বিভিন্নভাবে ভারতের যে অগাথ বিচরণ, তাকে ল্যাভরেজ হিসাবে ফেলে ভারতের হাত টুইস্ট করতে হবে। আগের মতন কেবল দিয়েই যাবো না। আমাদের থেকে কিছু চাইলে আমাদেরকেও কিছু দিতে হবে। যতদিন দিবে, ততদিন পাবে। সমানে সমান ডিল হবে।

«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post

No comments:

Leave a Reply

Note: only a member of this blog may post a comment.